সুবর্ণা হামিদ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
নূরজাহান শিল্পী, একজন প্রবাসী লেখক, কবি এবং সাংবাদিক। যিনি লেখনির মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। প্রবাসে থেকেও যিনি বাংলা ভাষাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বের বুকে। সংক্ষিপ্ত সফরে তিনি বাংলাদেশ আসলে কথা হয় তার সাথে।
বাংলাদেশের সাহিত্যে তার অবদান অপরিসীম ; প্রবাসে থেকেও তিনি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন।
নুরজাহান শিল্পী মৌলভীবাজার জেলার ঘড়ুয়া গ্রামের মেয়ে। তার বাবার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুন নূর ও মায়ের নাম ফয়জুন্নেসা। ৪ ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার স্বামীর বাড়ি ও মৌলভীবাজার জেলায়।
নূরজাহান শিল্পী দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে বসবাস করলেও, তার লেখনীর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য, সামাজিক চিত্র এবং মানুষের মনোভাব তুলে ধরেন। প্রবাসী জীবনের যন্ত্রণা, আকাঙ্ক্ষা এবং সংগ্রামের কথা তার কবিতায়, গল্পে এবং প্রবন্ধে প্রতিফলিত হয়েছে। তার লেখা প্রবাসী জনগণের অন্তর্দ্বন্দ্ব, দেশপ্রেম এবং দেশে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে।
তার কবিতাগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ও মানবিক অনুভূতি রয়েছে, যা পাঠকদের হৃদয়কে স্পর্শ করে। নূরজাহান শিল্পী প্রবাসে থেকেও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক ইস্যুতে সচেতনতা তৈরি করার জন্য সাংবাদিকতাও করেছেন। তিনি লিখেছেন বহু প্রবন্ধ এবং কলাম, যা প্রবাসী সম্প্রদায়ের শ্বাসরোধকারী সমস্যাগুলোর প্রতি আস্থা এবং মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। তার লেখার মধ্যে সমাজের প্রতি একটি গভীর ভালোবাসা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস প্রতিফলিত হয়।
শিল্পীর গল্প, কবিতা এবং প্রবন্ধের মাধ্যমে প্রবাসী নারীদের কণ্ঠস্বরকে তুলে ধরতে সহায়তা করেছেন। তিনি নারীদের ক্ষমতায়ন, শিক্ষা এবং সম-অধিকার বিষয়ে তার সাহিত্যে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ প্রকাশ করেছেন। তাঁর সাহিত্যযাত্রা শুধু যে বাংলাভাষী মানুষদের মননজগৎকে সমৃদ্ধ করেছে তা নয়, বরং আন্তর্জাতিক পরিসরেও তার লেখা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে, যা তার ভাবনাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে।
নূরজাহান শিল্পী যে কয়টি গ্রন্থ লিখেছেন তার মধ্যে “সপ্তর্ষী” যৌথ কাব্যগ্রন্থ দিয়ে যাত্রা শুরু, কুম্ভগ্রহণে একক কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন ‘যে জীবন মানুষের ‘এবং ‘জনক তোমার ছায়ায় বাংলাদেশ ‘। এছাড়া তিনি মাসিক আলোর সম্পাদক ও বাংলাভাষী ডটকম এর বার্তা সম্পাদক।
প্রতিটি গ্রন্থেই প্রবাসী জীবনের পাশাপাশি, নিজের দেশ এবং জাতির প্রতি এক গভীর অনুভূতি ও চেতনা ফুটে উঠেছে। তার সাহিত্যিক জীবনের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন, যে কোনো স্থান বা পরিস্থিতি তাকে তার বাংলা ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকে এক চুলও সরাতে পারেনি।
বিশ্ববাসী তার সাহিত্যের মাধ্যমে বুঝতে পারবে যে, প্রবাসী জীবনে শুধু কষ্ট নয়, বরং একটি অদ্ভুত ধরনের আশা, আকাঙ্ক্ষা এবং সংগ্রামের গল্পও রয়েছে। নূরজাহান শিল্পী তার লেখনীর মাধ্যমে সেই সংগ্রাম এবং যন্ত্রণা তুলে ধরেন, যা মানুষের অন্তরে এক গভীর চিহ্ন রেখে যায়।
Leave a Reply